১ সেপ্টেম্বর থেকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের আবেদন নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশে ডিজিটাল আর্থিক সেবার বিস্তার এবং ব্যাংকিং খাতের উদ্ভাবন ত্বরান্বিত করতে আগামী ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন গ্রহণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৬ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক খাতে বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর্থিক সেবায় দক্ষতা বাড়ানো এবং আর্থিক ব্যবস্থার আওতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যেই ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগানো এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে ক্ষুদ্র, কুটির ও ছোট উদ্যোক্তাদের (CMSME) উন্নয়ন অপরিহার্য। ডিজিটাল ব্যাংক এই খাতে সহজ ঋণপ্রাপ্তি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের একটি সহায়ক মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী, উপযুক্ত আবেদনকারীদের নীতিগতভাবে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবেদনপত্রের সঙ্গে সিলগালা খামে পাঁচ লাখ টাকা (অফেরতযোগ্য) প্রসেসিং ফি এবং প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র জমা দিতে হবে। পাশাপাশি ই-মেইলের মাধ্যমেও (apply.db@bb.org.bd ) নথি পাঠাতে হবে। অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। এর আগে, ২০২৩ সালে ৫২টি আবেদন গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যার মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক অনুমোদন এবং ২টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মতিপত্র (লেটার অব কনসেন্ট) দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই বছর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিতসহ প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনায় যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে, ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে ইতিপূর্বে উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ‘বাংলাদেশ: কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়াগনস্টিক’ শীর্ষক ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আইএফসি ও মিগা উল্লেখ করে—দুর্নীতি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অস্পষ্টতা এবং লাইসেন্স বিতরণে অসঙ্গতি দেশের বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী শাখাবিহীন ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে ভারত ও পাকিস্তান ২০২২ সালেই ডিজিটাল ব্যাংক ব্যবস্থা চালু করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারীরা সরাসরি ক্ষুদ্র ঋণ দিতে না পারলেও, ডিজিটাল ব্যাংকের অধীনে তা দেওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে একক ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত রয়েছে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি পর্যাপ্ত সক্ষমতা ও কার্যক্রম প্রদর্শন করতে পারে, তাহলে ঋণের সীমা বৃদ্ধি করার কথাও ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক।