গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধ: সেনাবাহিনীর হেফাজতে ১৫ কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ

গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর ১৫ জন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকার সেনা সদরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেল ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটকে রেখে নির্যাতন এবং গুমের ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে এই ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। দুই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। একই সঙ্গে আসামির তালিকায় রয়েছেন তাঁর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক। সেনা সদর জানায়, আসামিদের মধ্যে ১৫ জন এখনো সক্রিয়ভাবে চাকরিতে রয়েছেন এবং একজন রয়েছেন এলপিআরে (অবসরের আগে ছুটি)। পলাতক রয়েছেন আরও একজন। চাকরিরত ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা সদর দপ্তরের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গুমের মতো অপরাধে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ আসছিল। এবার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সরাসরি পদক্ষেপ এবং সেনা সদর দপ্তরের দ্রুত প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।