ধানমন্ডিতে ১২ বছরের গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ

রাজধানীর ধানমন্ডিতে মারিয়া (১২) নামে এক শিশু গৃহকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মারিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার আচুলা গ্রামে হলেও তার বাবা-মা বর্তমানে ঢাকার বসিলা এলাকায় বসবাস করেন। তার বাবার নাম মাসুদ। গৃহকর্ত্রী নাসরিন সুলতানা জানান, তিনি বাসায় একা থাকেন। স্বামী ও মেয়ে দেশের বাইরে। ঘটনার দিন দুপুরে গাড়িচালক বাসায় এসে কলিং বেল চাপলেও দরজা খোলেনি মারিয়া। পরে তিনি ফোন পেয়ে বাসায় এসে দরজা খুলে গেস্ট রুমে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পান। তখনও মারিয়ার শরীর গরম ছিল বলে জানান তিনি। দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢামেকে—তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। নাসরিন আরও জানান, চার মাস আগে মারিয়ার নানি বকুল তাকে কাজের জন্য বাসায় নিয়ে আসেন। নাসরিনের বাসায় আগে দুজন গৃহকর্মী থাকলেও একজন চলে যাওয়ায় গত দুই মাস ধরে একাই কাজ করছিল মারিয়া। তার ধারণা, মারিয়া হয়তো কাজ করতে না চাওয়ায় আত্মহত্যা করতে পারে। মারিয়ার নানি বকুল বলেন, “চার মাস আগে ৪ হাজার টাকা বেতনে তাকে ওই বাসায় কাজে দিই। আমি পাশের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করি। হঠাৎ দুপুরে খবর পাই—মারিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।” ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহটি বর্তমানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি ধানমন্ডি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে এবং তারা তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে শিশুশ্রম, গৃহকর্মী নির্যাতন ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে শহরের অভিজাত এলাকায় গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা ও মানবিক পরিবেশ নিয়ে।