রাকসু নির্বাচনে প্রথম বর্ষের ভোটাধিকারসহ দুটি দাবিতে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি, উত্তপ্ত পরিস্থিতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট নির্বাচনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ দুটি দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়, যা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ছাত্রদলের অপর দাবি ছিল—রাকসু কার্যালয়ের সামনে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন করার অপচেষ্টার প্রতিবাদ। অবস্থানকালে ছাত্রদল বিভিন্ন স্লোগান দেয়: ‘প্রথমবর্ষ ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘দিতে হবে দিয়ে দাও, প্রথমবর্ষের ভোটাধিকার’, ‘আমার বোন আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’। ছাত্রদলের অভিযোগ: ভাড়াটে বাহিনীর হামলা, নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী অভিযোগ করেন, “রবিবার রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হামলার জন্য উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব ছাত্রশিবির ও তাদের তিন সহযোগী সংগঠনকে ১৫ লাখ টাকা অর্থায়ন করেছে।” তিনি দাবি করেন, হামলায় ছাত্রদলের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার শিকার হতে হয়। সহসভাপতি সাবিহা আলম মুন্নি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়। পরে ফেসবুকেও আমাদের নারী কর্মীদের নিয়ে বুলিং শুরু হয়।” উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া: ‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা’ এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “ছাত্রদলের অভিযোগ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট। নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে তারা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।” রোববারের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি: চেয়ারে ভাঙচুর, তালা, ধস্তাধস্তি এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ছাত্রদল। সোয়া ১০টার দিকে তারা একটি চেয়ার ভাঙচুর ও একটি টেবিল উল্টে দেয় এবং সাড়ে ১০টায় কার্যালয়ের ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এতে মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মনোনয়ন তুলতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ঘিরে ধরেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের একটি দল আসলে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। ছাত্রশিবিরের আগমন ও সংঘর্ষ দুপুর ১টার দিকে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র তুলতে এলে তাদের সঙ্গেও ছাত্রদলের ধস্তাধস্তি হয়। প্রতিবাদের মুখে ছাত্রদল রাকসু কার্যালয়ের ফটক ছেড়ে পাশে অবস্থান নেয়। চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দুপুর ২টার দিকে মনোনয়ন বিতরণ পুনরায় শুরু হয়। তবে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ডাকা বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট ও ছাত্র অধিকার পরিষদ।